পিংকি আক্তার (রাঙ্গামাটি)
রাঙামাটির স্থানীয় বাজারে সারা বছরব্যাপী পাওয়া যাচ্ছে আনারস। রাঙ্গামাটির বিস্তীর্ণ পাহাড়ি জমিতে প্লানটিং টাইম ভেরিয়েশন ও হরমোন ব্যবহার করে সারা বছর আবাদ হচ্ছে আনারস। রাঙ্গামাটি জেলায় জলডুবি, হানিকুইন নামের দুই জাতের আনারস চাষ হয়ে থাকে। এছাড়াও এমডি-২ জাতের আনারসেরও আবাদ করা হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, রাঙ্গামাটিতে এবার ২,৫৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আনারস চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২,২৪৫ হেক্টর। রাঙামাটির ১০টি উপজেলার মধ্যে নানিয়ারচরে ১৪০০ ও সদর উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর, লংগদু ১৪৫ হেক্টর, বাঘাইছড়ি ১২৫, বিলাইছড়ি ৮০, রাজস্থলী ৯০, কাপ্তাই ৮৫, জুড়াছড়ি ৮০, বরকল ৯০, কাউখালী ৭৫ হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, রাঙ্গামাটি নানিয়াচরে সবচেয়ে বেশি আনারসের চাষ করা হয়। জেলার আনারসের মোট আবাদের প্রায় ৬০/৭০ শতাংশই নানিয়ারচরে আবাদ করা হয়। রাঙ্গামাটির ৮৫ শতাংশই হানিকুইন জাতের আনারস। এছাড়াও গত তিন বছরে মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা এমডি-২ জাতের আনারসের আবাদ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি জেলায় এখন সারা বছরব্যাপী আনারস পাওয়া যায়। চাষিরা আনারসের বছরব্যাপী চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্লান্টিং টাইম ভেরিয়েশন করে থাকে এবং হরমোন ব্যবহার করে এ দুটি কারণে সারা বছর এখন আনারস পাওয়া যায়। চাষীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।
মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত আনারসের ভরা মৌসুম হলেও গত কয়েক বছর ধরে জেলার অনেক কৃষক মৌসুমের আগেই আগাম আনারসের চাষ করছেন।
চাষিরা জানান, এখন আনারসের মৌসুম না হলেও পাহাড়ে কয়েক বছর ধরে আগাম ফলন আসা আনারস চাষ হচ্ছে। এতে উৎপাদিত আগাম আনারসে বাড়তি লাভবান করতে পারেন তারা। হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে পাহাড়ি এলাকায় আগাম আনারসের ব্যাপক ফলন হলেও। বাজারে চাহিদা কম বলছেন চাষিরা।
রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উৎপাদিত আনারস কৃষকরা ইঞ্জিন বোটে করে রাঙ্গামাটি শহরের সমতাঘাট, তবলছড়ি, পৌর ট্রাক টার্মিনাল এবং রির্জাভ বাজারে নিয়ে আসছে। সেখান থেকে স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা পাইকারি দরে আনারস কিনছেন।
রবিবার সকালে বনরূপা বাজার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, স্থানীয়ভাবে খুচরা বাজারে প্রতি জোড়া ছোট – মাঝারি আকারের আনারস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বড় আকারের আনারস বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা জোড়া।
রাঙ্গামাটির কুতুকছড়ির আনারস চাষী মনি চাকমা বলেন, আমি প্রতিবছরেই আনারসের চাষ করি। এবার ২০ হেক্টর জমিতে জলডুবি জাতের আনারসের আবাদ করেছি। আনারস বেশ সাইজের হয়েছে। আনারস চাষে ভালো ফলন পেয়েছি।
Leave a Reply