খাগড়াছড়ির গভীর পাহাড়ে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার ছায়া। অপহরণের তিন দিন পার হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫ শিক্ষার্থীসহ ছয়জনের। উদ্ধারে এবার অভিযানের নেতৃত্বে নেমেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোর থেকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের পানখাইয়া পাড়ার মধুপুর ও নোয়াপাড়া এলাকায় শুরু হয় সেনা নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর টানা সাত ঘণ্টার ব্লক রেইড। দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে কোনো অগ্রগতি হয়নি, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও আশাবাদী।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, অপহৃতদের উদ্ধারে সেনা নেতৃত্বাধীন অভিযান চলছে। এ সময় জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
অভিযানের বিষয়ে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান বলেন, “আমাদের একমাত্র লক্ষ্য—অপহৃত চবি শিক্ষার্থীদের নিরাপদে উদ্ধার করা। যারা পাহাড়ে চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, তাদের দমন না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
উল্লেখ্য, বৈসাবি উৎসব শেষে ফেরার পথে গত ১৬ এপ্রিল সকালবেলা খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের গিরিফুল এলাকা থেকে অস্ত্রধারীরা অপহরণ করে চবি’র পাঁচ শিক্ষার্থীসহ মোট ছয়জনকে। সন্দেহ করা হচ্ছে, সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্যরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
অপহৃতরা হলেন চবি’র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশান চাকমা, চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা এবং প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। সকলেই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এদিকে, সন্তান ফেরত চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী চাকমা। তিনি লিখেছেন,
“প্লিজ, কারো মায়ের বুক খালি করবেন না। দোষ থাকলে শাস্তি দিন, কিন্তু সন্তান হারানোর যন্ত্রণা যেন আর কোনো মা'কে না সহ্য করতে হয়। আমি হাতজোড় করে বলছি, ফিরিয়ে দিন আমাদের সন্তানদের।”
অপহরণের ভয়াবহ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা দ্রুত উদ্ধার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মো. মঈন উদ্দিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো. সোহরাওয়ার্দী সাব্বির
বার্তা সম্পাদক: কামরুল ইসলাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত