তারিকুল ইসলাম তারা ( লংগদু)
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার পরিবার জানান, লংগদুর আটারকছড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে তিন শিশু সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ রাত ৩টার দিকে এক ব্যক্তি মুখে গামছা বেঁধে ঘরে ঢুকে তাকে ঝাঁকিয়ে তোলে এবং মুখ বেঁধে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। গৃহবধূ বাধা দিলে অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘরের বঁটি দা দিয়ে গলায় ধরে ভয় দেখায়, চিৎকার করলে জবাই করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়।
পরে পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার একটি বাটন মোবাইল ফোন ফেলে পালিয়ে যায়। ভিকটিম বলেন, “আমি চেহারা না চিনলেও আচরণ, কথাবার্তা ও শরীর দেখে বুঝি, তিনি আবু সালেহ ওরফে আদু। পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নিশ্চিত হই, তিনি খালেক মুন্সির ছেলে।”
ঘটনার সময় গৃহবধূর দশ বছরের ছেলে বলেন, “আম্মু চিৎকার করলে আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি একজন লোক মায়ের সঙ্গে কুস্তি করছে, আমি ভয়ে কান্না করি।”
পাশের বাড়ির গৃহবধূ এসে ভিকটিমকে কাঁপতে দেখেন এবং স্থানীয়দের ডেকে চাচাতো দেবর হাসানের মাধ্যমে রাত ৪টার দিকে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ভিকটিমের খালা জানান, “আমরা গরীব মানুষ। রোগী খুব অসুস্থ ছিল—বমি আর পেট ব্যথা হচ্ছিল। আমাদের নিয়ে অনেকেই নানা কথা বলছে। আমরা বিচার চাই। কেউ হাছানকে বিশ হাজার টাকা দিয়েছে শুনেছি, তবে আমরা কোনো টাকা রাখিনি।”
দেবর হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, “আদুর মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমরা খাগড়াছড়ি হাসপাতালে এনেছি।” তবে তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আবু সালেহের বাবা খালেক মুন্সি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার ছেলে এমন কাজ করতে পারে না। ঘটনার রাতে তারা একটা মোবাইল ফোন নিয়ে আমার বাড়ি আসে। পরে দেখি সেটা আমার ছেলের মোবাইল। এরপর জানতে পারি, আমার ছেলের ঘরেও চুরি হয়েছে। কেউ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”
আবু সালেহের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেও পরে বন্ধ করে দেন।
ঘটনার পরদিন আবু সালেহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চুরির অভিযোগ থানায় দিলেও পরে তা নিজে থেকে প্রত্যাহার করেন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, “রাবেয়া নামে একজন ভর্তি ছিলেন। তবে বর্তমানে বাইরে থাকায় বিস্তারিত জানাতে পারছি না।”
লংগদু থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, “ভিকটিমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আবু সালেহের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। দ্রুত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মো. মঈন উদ্দিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো. সোহরাওয়ার্দী সাব্বির
বার্তা সম্পাদক: কামরুল ইসলাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত